
চায়ের কাপের উষ্ণতা
Rating: 0.0 | Likes: 1 | Views: 75 | Shares: 29
শীতকালের সকাল। কুয়াশায় ঢাকা রাস্তা। শহরের ব্যস্ততা তখনও পুরোপুরি জেগে ওঠেনি। তবু একটি জায়গা থেকে হালকা ধোঁয়া উঠছে—স্টেশন সংলগ্ন এক কোণায়, একটা ছোট্ট চায়ের ঠেলাগাড়ি।
চায়ের দোকানদার একজন বৃদ্ধ—নাম রামু কাকা। বয়স প্রায় ৭৫, কিন্তু ভোর পাঁচটায় উঠে ঠিকমতো আগুন জ্বালান, আদা কুচো করে রাখেন, আর তামার কেটলিতে জল বসিয়ে দেন। ঠান্ডায় কাঁপা হাত, তবু মুখে হাসি।
অনেকে জিজ্ঞেস করে, “এই বয়সে আরাম করে থাকেন না কেন কাকা?”
উত্তরে বলেন, “আরাম করে থাকব কার জন্যে? এক কাপ চায়ের জন্য যে ছেলেটা স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকে, তার মুখে একটু উষ্ণতা দিতে পারলেই আমার দিনের শুরুটা হয়ে যায়।”
স্টেশনে তখন ঢুকছে প্রথম লোকাল ট্রেন। যাত্রীরা নেমেই কাকার দোকানের দিকে ভিড় জমায়। কেউ ৫ টাকার চা নেয়, কেউ আধা কাপ করে নেয় ৩ টাকায়। কেউ বলে, “উধার রাখো কাকা, কাল দেব।” কাকা চুপচাপ মাথা নেড়ে দেন।
একদিন এক কলেজের মেয়ে নামল ট্রেন থেকে। খুব কাঁপছিল ঠান্ডায়, মুখে চিন্তার রেখা। চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল কাকার দোকানের পাশে।
কাকা বললেন,
“মা, একটা চা খাও, শরীর গরম হবে।”
মেয়েটা বলল,
“পয়সা নেই কাকা, আজকে খাবো না।”
কাকা বললেন,
“কেন মা, শরীর কি পয়সা দেখে ঠান্ডা খায়? বসো, আমি দিচ্ছি।”
মেয়েটা কাঁপতে কাঁপতে বসে পড়ল। এক কাপ আদা চা, দুটো বেকারি বিস্কুট। মেয়েটার চোখে জল। বলল,
“ধন্যবাদ কাকা। আপনাকে মনে রাখব।”
মাস তিনেক পর একদিন হঠাৎ করে স্টেশনে আসল বড়ো গাড়ি, সঙ্গে কেমেরা, লোকজন। এক সুন্দরী মহিলা নামলেন, সঙ্গে এক টিভি চ্যানেলের টিম।
কাকাকে বললেন,
“চেনেন কাকা? আমি সেই মেয়েটি—যে দিন তিন মাস আগে আপনার দেওয়া চা খেয়েছিল।”
সবাই অবাক।
মেয়েটি এখন বড় সংবাদপত্রের সাংবাদিক। সে কাকার কথা বলেছিল তার কলামে—“এক কাপ চা আর এক চিরস্মরণীয় সকাল।” আর আজ তাকে “মানবিক সম্মাননা” দিতে এসেছে সেই টিভি চ্যানেল।
কাকা কিছুই বুঝতে পারছিলেন না। চোখে জল, মুখে শুধু একটা কথা,
“আমি তো শুধু চা দিয়েছিলাম মা, ভালোবাসা তো আমি পরিমাপ করিনি।”
শেষ কথা:
এই গল্প শেখায়, ভালোবাসা ও মানবতা পয়সা চায় না, চায় একটি মন। এক কাপ চা হয়তো ছোট, কিন্তু কারো জীবনে সেটা হয়ে উঠতে পারে এক চিরস্মরণীয় উপহার।
চায়ের দোকানদার একজন বৃদ্ধ—নাম রামু কাকা। বয়স প্রায় ৭৫, কিন্তু ভোর পাঁচটায় উঠে ঠিকমতো আগুন জ্বালান, আদা কুচো করে রাখেন, আর তামার কেটলিতে জল বসিয়ে দেন। ঠান্ডায় কাঁপা হাত, তবু মুখে হাসি।
অনেকে জিজ্ঞেস করে, “এই বয়সে আরাম করে থাকেন না কেন কাকা?”
উত্তরে বলেন, “আরাম করে থাকব কার জন্যে? এক কাপ চায়ের জন্য যে ছেলেটা স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকে, তার মুখে একটু উষ্ণতা দিতে পারলেই আমার দিনের শুরুটা হয়ে যায়।”
স্টেশনে তখন ঢুকছে প্রথম লোকাল ট্রেন। যাত্রীরা নেমেই কাকার দোকানের দিকে ভিড় জমায়। কেউ ৫ টাকার চা নেয়, কেউ আধা কাপ করে নেয় ৩ টাকায়। কেউ বলে, “উধার রাখো কাকা, কাল দেব।” কাকা চুপচাপ মাথা নেড়ে দেন।
একদিন এক কলেজের মেয়ে নামল ট্রেন থেকে। খুব কাঁপছিল ঠান্ডায়, মুখে চিন্তার রেখা। চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল কাকার দোকানের পাশে।
কাকা বললেন,
“মা, একটা চা খাও, শরীর গরম হবে।”
মেয়েটা বলল,
“পয়সা নেই কাকা, আজকে খাবো না।”
কাকা বললেন,
“কেন মা, শরীর কি পয়সা দেখে ঠান্ডা খায়? বসো, আমি দিচ্ছি।”
মেয়েটা কাঁপতে কাঁপতে বসে পড়ল। এক কাপ আদা চা, দুটো বেকারি বিস্কুট। মেয়েটার চোখে জল। বলল,
“ধন্যবাদ কাকা। আপনাকে মনে রাখব।”
মাস তিনেক পর একদিন হঠাৎ করে স্টেশনে আসল বড়ো গাড়ি, সঙ্গে কেমেরা, লোকজন। এক সুন্দরী মহিলা নামলেন, সঙ্গে এক টিভি চ্যানেলের টিম।
কাকাকে বললেন,
“চেনেন কাকা? আমি সেই মেয়েটি—যে দিন তিন মাস আগে আপনার দেওয়া চা খেয়েছিল।”
সবাই অবাক।
মেয়েটি এখন বড় সংবাদপত্রের সাংবাদিক। সে কাকার কথা বলেছিল তার কলামে—“এক কাপ চা আর এক চিরস্মরণীয় সকাল।” আর আজ তাকে “মানবিক সম্মাননা” দিতে এসেছে সেই টিভি চ্যানেল।
কাকা কিছুই বুঝতে পারছিলেন না। চোখে জল, মুখে শুধু একটা কথা,
“আমি তো শুধু চা দিয়েছিলাম মা, ভালোবাসা তো আমি পরিমাপ করিনি।”
শেষ কথা:
এই গল্প শেখায়, ভালোবাসা ও মানবতা পয়সা চায় না, চায় একটি মন। এক কাপ চা হয়তো ছোট, কিন্তু কারো জীবনে সেটা হয়ে উঠতে পারে এক চিরস্মরণীয় উপহার।
No comments yet.