
এক কাপ চায়ের দামে
Rating: 0.0 | Likes: 0 | Views: 94 | Shares: 0
রাহুল, বয়স সতেরো, পশ্চিম মেদিনীপুরের এক ছোট্ট গ্রামের ছেলে। ওর বাবা জগদীশ দাস গ্রামের একমাত্র চায়ের দোকান চালান, আর মা কাজ করেন পাশের বাড়িতে—ঝিয়ের কাজ। রাহুলের পরিবার গরিব, কিন্তু কখনও স্কুল বন্ধ হয়নি ওর। বরং প্রতিদিন ভোরে বাবা দোকান খোলার আগেই রাহুল সাইকেল নিয়ে ছুটত স্কুলের পথে।
এইচএস পাশ করার পর ওর মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব শুরু হয়। অনেকে বলল, “এত পড়া করে কী হবে? বাবা চায়ের দোকান চালায়, তুইও সেটা সামলে নে।”
রাহুল চুপ করত।
তার ইচ্ছা ছিল কলেজে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া, আর বাবার মতোই চা বিক্রি করেও যেন সে সমাজে কিছু করে দেখাতে পারে।
কিন্তু সমস্যা ছিল একটাই—অর্থ।
কলেজের ফি, বই কেনা, বাস ভাড়া—সব মিলিয়ে হাজার ছুঁইছুঁই। বাবা বলল, “রাহুল, তোকে পড়াতে পারি, কিন্তু দোকান সামলাতে হবে। একা পারি না আর।”
রাহুল রাজি হল।
সকাল সাতটা থেকে দশটা—চায়ের দোকানে বাবার সঙ্গে কাজ। তারপর কলেজে যাওয়া। রাতে ফিরেও দোকান পরিষ্কার করা।
প্রথমদিকে বন্ধুরা হাসত, “তুই কলেজ পড়ছিস আর চা বেচিস? লোকের সামনে লজ্জা হয় না?”
রাহুল জবাব দিত না।
শুধু একটা কথা মনে রাখত, “লজ্জা চা বিক্রিতে নয়, লজ্জা মিথ্যে সম্মানে।”
একদিন কলেজে ‘ডিজিটাল সাহিত্য পাঠ’ প্রতিযোগিতা হল। রাহুল সেখানে লিখল—“এক কাপ চায়ের দামে” শিরোনামে একটি প্রবন্ধ। সেখানে সে লিখল, কীভাবে প্রতিদিন সকালবেলায় চায়ের দোকানে বসে সে মানুষের জীবনের গল্প শোনে—কেউ চাকরির দুঃখ করে, কেউ সংসারের, কেউ রাজনীতির গালি দেয়।
তবু সবাই আসে, চা খায়, আবার কাজেও যায়।
এক কাপ চা হয়ে ওঠে ভোরের সাহস।
প্রবন্ধটি সেরা নির্বাচিত হয়।
কলেজের এক স্যার, অর্ঘ্য বাবু, রাহুলকে ডেকে বললেন, “তুমি জানো, তোমার মতো ছাত্রকে আমরা খুঁজে পাই না। তুমি চাইলে আমি তোমাকে একটা স্কলারশিপের ব্যাপারে সাহায্য করতে পারি।”
সেই থেকে রাহুল কলেজের ফি দিতে শুরু করল "প্রবন্ধ লেখা আর কলেজ ম্যাগাজিন সম্পাদনায়" অংশ নিয়ে।
দেখতে দেখতে তিন বছর কেটে গেল।
আজ রাহুল পাশ করে কলকাতার এক স্কুলে বাংলা পড়ায়। কিন্তু ছুটিতে বাড়ি গেলে এখনো বাবার দোকানে বসে চা বানায়।
গ্রামের লোক এখন চা খেতে খেতে বলে, “ওই ছেলেটা তো চা বেচেই মাস্টার হলো, দেখলি তো!”
রাহুল হাসে।
দোকানের এক কোণে আজও সে ঝুলিয়ে রেখেছে সেই প্রথম প্রবন্ধ—“এক কাপ চায়ের দামে”।
গল্পের শিক্ষণীয় দিক:
পেশার ছোট-বড় বলে কিছু নেই। শিক্ষা আর ইচ্ছা থাকলে যেকোনো পেশাকে সম্মানজনক করে তোলা যায়। অভাব কখনোই স্বপ্নের বাধা নয়, বরং নিজের বিশ্বাস আর পরিশ্রমই ভবিষ্যতের চাবিকাঠি।
এইচএস পাশ করার পর ওর মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব শুরু হয়। অনেকে বলল, “এত পড়া করে কী হবে? বাবা চায়ের দোকান চালায়, তুইও সেটা সামলে নে।”
রাহুল চুপ করত।
তার ইচ্ছা ছিল কলেজে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া, আর বাবার মতোই চা বিক্রি করেও যেন সে সমাজে কিছু করে দেখাতে পারে।
কিন্তু সমস্যা ছিল একটাই—অর্থ।
কলেজের ফি, বই কেনা, বাস ভাড়া—সব মিলিয়ে হাজার ছুঁইছুঁই। বাবা বলল, “রাহুল, তোকে পড়াতে পারি, কিন্তু দোকান সামলাতে হবে। একা পারি না আর।”
রাহুল রাজি হল।
সকাল সাতটা থেকে দশটা—চায়ের দোকানে বাবার সঙ্গে কাজ। তারপর কলেজে যাওয়া। রাতে ফিরেও দোকান পরিষ্কার করা।
প্রথমদিকে বন্ধুরা হাসত, “তুই কলেজ পড়ছিস আর চা বেচিস? লোকের সামনে লজ্জা হয় না?”
রাহুল জবাব দিত না।
শুধু একটা কথা মনে রাখত, “লজ্জা চা বিক্রিতে নয়, লজ্জা মিথ্যে সম্মানে।”
একদিন কলেজে ‘ডিজিটাল সাহিত্য পাঠ’ প্রতিযোগিতা হল। রাহুল সেখানে লিখল—“এক কাপ চায়ের দামে” শিরোনামে একটি প্রবন্ধ। সেখানে সে লিখল, কীভাবে প্রতিদিন সকালবেলায় চায়ের দোকানে বসে সে মানুষের জীবনের গল্প শোনে—কেউ চাকরির দুঃখ করে, কেউ সংসারের, কেউ রাজনীতির গালি দেয়।
তবু সবাই আসে, চা খায়, আবার কাজেও যায়।
এক কাপ চা হয়ে ওঠে ভোরের সাহস।
প্রবন্ধটি সেরা নির্বাচিত হয়।
কলেজের এক স্যার, অর্ঘ্য বাবু, রাহুলকে ডেকে বললেন, “তুমি জানো, তোমার মতো ছাত্রকে আমরা খুঁজে পাই না। তুমি চাইলে আমি তোমাকে একটা স্কলারশিপের ব্যাপারে সাহায্য করতে পারি।”
সেই থেকে রাহুল কলেজের ফি দিতে শুরু করল "প্রবন্ধ লেখা আর কলেজ ম্যাগাজিন সম্পাদনায়" অংশ নিয়ে।
দেখতে দেখতে তিন বছর কেটে গেল।
আজ রাহুল পাশ করে কলকাতার এক স্কুলে বাংলা পড়ায়। কিন্তু ছুটিতে বাড়ি গেলে এখনো বাবার দোকানে বসে চা বানায়।
গ্রামের লোক এখন চা খেতে খেতে বলে, “ওই ছেলেটা তো চা বেচেই মাস্টার হলো, দেখলি তো!”
রাহুল হাসে।
দোকানের এক কোণে আজও সে ঝুলিয়ে রেখেছে সেই প্রথম প্রবন্ধ—“এক কাপ চায়ের দামে”।
গল্পের শিক্ষণীয় দিক:
পেশার ছোট-বড় বলে কিছু নেই। শিক্ষা আর ইচ্ছা থাকলে যেকোনো পেশাকে সম্মানজনক করে তোলা যায়। অভাব কখনোই স্বপ্নের বাধা নয়, বরং নিজের বিশ্বাস আর পরিশ্রমই ভবিষ্যতের চাবিকাঠি।
No comments yet.